বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৭ অপরাহ্ন
প্রিন্স তালুকদার, বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টার দূর্নিতীর অভয়ারন্যে পরিনত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীন অনিয়ম, সীমাহীন লুটপাট, দূর্নিতী যেন দেখার কেউ নেই। একের পর এক ঘটছে ভয়াবহ লুটপাট, জালিয়াতি, দূর্নিতী। আর এই দূর্নিতীর মহোৎসবের একমাত্র মহানায়ক বরিশালের ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আমদানীকৃত ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারিকেল চারার সরকারী মূল্য প্রতিটি ৫০০ টাকা হলেও তিনি প্রচুর চারা জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার বিভিন্ন নার্সারীতে ৪০০ টাকা করে রিসিভ ছাড়া বিক্রয় করেছেন। এবছরের মে মাসে প্রথম ধাপে ৪০০ টি নারিকেল চারা, যার মূল্য ২,০০,০০০ টাকা এবং দ্বিতীয় ধাপে ১৫০ টি নারিকেল চারা যার মূল্য ৭৫,০০০ টাকা, তিনি বিনা রিসিভে জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার মেসার্স শান্তা নার্সারীতে বিক্রয় করেন। গত ২১/৫/২০১৮ তারিখে বরিশাল শহরের হাটখোলা বাজার এলাকার হাওলাদার স্টোর এর স্বত্ত্বাধীকারী মামুন হাওলাদারের কাছে ৩ টি ও ২৭/০৫/২০১৮ তারিখে মুলাদি উপজেলার মাস্তানপাড়া গ্রামের আবদুল মালেক মাষ্টারের কাছে ০২ টি নারিকেল চারা বিক্রয় করেন কিন্তু কোন রিসিভ দেন নাই। উক্ত টাকা তিনি সরকারী কোষাগারে জমা না দিয়ে সম্পুর্ন নিজে আত্বসাৎ করেন। এভাবে হাজার হাজার ভিয়েতনামী চারার টাকা আত্বসাৎ করেছেন।
কোন সহজ সরল ব্যাক্তি চারা কিনতে আসলে যদি দেখে যে লোকটি সাদামাটা কিংবা বেশি চালাক না তাহলেই তাকে রিসিভ ছাড়া চারা ধরিয়ে দেয়া হয় এবং সেই টাকা আত্বসাৎ করেন। নাম প্রকাশে অনি”ছুক বরিশালের ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের এক কর্মকর্তা বলেন, পাঁচ বছরের এই প্রকল্প আরো তিন বছর চলমান থাকবে,কিন্তু এভাবে যদি উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদার লুটপাট, দূর্নিতী করতে থাকে তাহলে আগামী তিন বছরে সরকারের কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব লুটপাট হবে। এবছরের ফেব্রুয়ারী মাসে কর্মচারী কোয়ার্টার মেরামতসহ টিউবওয়েল বসানোর জন্য তিনি সরকারী ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করান।
তিনি কাজ করেছেন মাত্র ২-৩ লক্ষ টাকার, বাকি টাকা তিনি নিজে আত্বসাৎ করেছেন। উক্ত মেরামতের কাজের জন্য কোনো প্রকার দরপত্র আহবান করেন নাই। যেখানে তাকে সরকারীভাবে দরপত্র ছাড়া ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কাজ করানোর ক্ষমতা দেয়া আছে। তিনি যে ঠিকাদার দিয়ে কাজ করিয়েছেন সে ঠিকাদার অত্র হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যান উন্নয়ন কর্মকর্তা এ বি এ শাহ এমরানের ভাতিজা সরওয়ার হোসেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানকালে অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়, সরওয়ারের সাথে উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদার গোপন চুক্তি করেন, লাভের অর্ধেক ভাগ তাকে দিতে হবে।
বর্তমানে চার তলা দুটি কোয়ার্টার সহ সেন্টারের সমস্ত রাস্তা পিচঢালাই হবে এবং সেচ এর জন্য নালা তৈরীর কাজ চলমান রয়েছে। এই সমস্ত কাজ তিনি ভাতিজা ঠিকাদারকে দিয়ে করানো জন্য চেষ্টায় আছেন কোন প্রকার দরপত্র আহবান ব্যতিত। বর্তমানে অত্র সেন্টারের ২৫০ ফিট সীমানা প্রাচীরের কাজ চলছে এবং তাতেওনিম্মমানের কাচামাল দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ যেমন সীমানা প্রাচীর, নাম ফলক, অফিস ভবন, কর্মচারী বাসস্থান পাম্প স্থপন ইত্যাদি আরো অসংখ্য কাজ তিনি দরপত্র আহবান ছাড়াই করেছেন যা সম্পূর্ন নিয়ম বর্হিভূত। যা বরাদ্ধ ফাইল দেখে বরাদ্ধের অনুকুলে বাস্তবে কতটুকু কাজ হয়েছে তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষন করলে বুঝতে পারা যায়। এসকল অনিয়ম, লুটপাট, দূর্নিতী সম্পর্কে বরিশালের ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদার বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতাধীন, বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের আমদানীকৃত ভিয়েতনামের খাটো জাতের নারিকেল চারা, যার প্রতিটির সরকারী মূল্য প্রকৃতই ৫০০ টাকা কিš‘ রিসিভ ছাড়া ৪০০ টাকা বিক্রীর বিষয়ে আমি সতর্ক হবো। এবছরের ফেব্রুয়ারী মাসে কর্মচারী কোয়ার্টার মেরামতসহ টিউবওয়েল বসানোর জন্য সরকারী ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। টিউবওয়েল বসিয়েছি, গাড়ী রাখার গ্যারেজ নির্মান করেছি। বরিশালের ঐতিহ্যবাহী রহমতপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ পরিচালক স্বপন কুমার হালদারের অনিয়ম, লুটপাট অনুসন্ধানকালে বেরিয়ে আসছে দূর্নিতীর অনেক ভয়ংকর অজানা তথ্য, যা থাকছে আগামী পর্বে।
Leave a Reply